Your order.
There are no items in your Cart.
শিশুদের পঙ্গুত্বের একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে পোলিও। বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার শিশু প্রতিবছর পোলিওর কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করে। স্রেফ ১৯৫২ সালেই কেবলমাত্র আমেরিকাতেই পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছিল ৫৮ হাজার শিশু এবং এদের মাঝে ৩ হাজার শিশু মারা যায়। শুধুমাত্র শিশুরাই নয়, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ফ্র্যাংকলিন রুজভেল্ট ৪ বার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে যান। বিজ্ঞানীরা তাদের চেষ্টার ত্রুটি না করে গবেষণা অব্যাহত রাখে, এবং এর প্রতিকার বের করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু যখন কেউই সফল হচ্ছেন না তখন চল্লিশ বছর বয়েসি এক বিজ্ঞানীর মাথায় এলো ভিন্ন একটি আইডিয়া। তিনি জীবিত ভাইরাসের পরিবর্তে মৃত ভাইরাস দিয়ে প্রতিকার বের করার চেষ্টা করেন। তার নাম ছিলো জোনাস এডওয়ার্ড সল্ক। অশিক্ষিত ঘরের ছেলে জোনাসের বাবা-মা কিন্তু শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতেন যার ফলে জোনাস কে পরবর্তিতে অশিক্ষিত হতে হয়নি,বরং বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীদের কাতারে সামিল করে তার গবেষণা এবং অভূতপূর্ব আবিষ্কার।
পোলিও যখন মুর্তিমান আতংক তখন তিনি আড়াই বছর ধরে এর প্রতিকার বের করার পিছনে লেগে থাকেন। বিভিন্ন জিনিস ঘেটে তিনি মৃত ভাইরাস দিয়ে পোলিওর টিকা বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। বানিয়েছেনও কিন্তু এটি নিরাপদ কিনা সেই পরীক্ষা করবেন কার শরীরে পুশ করে! এজন্য তিনি নিজের শরীরকেই বেছে নেন। কেবল তাই না, নিজের স্ত্রী আর নিজের সন্তানদেরও টিকা দিলেন,নিরাপদের ব্যাপারটা নিশ্চিত করলেন। তিনি অত্যন্ত আত্নবিশ্বাসী ছিলেন বিধায় কোনো প্রকার দ্বিধা ছাড়াই নিজের এবং প্রাণপ্রিয় মানুষদের শরীরেই পরীক্ষা চালায়। এর পর আস্তে আস্তে দেশব্যাপী ছড়িয়ে গেলো, লাখ লাখ মানুষ ক্লিনিকাল ট্রায়ালে এর কার্যকারিতা প্রমাণ পেলো এবং ১৯৫৫ সালে লাইসেন্স পেলো সল্কের এই পোলিও ভ্যাক্সিন। অবসান ঘটল পোলিও আতংকের। পরবর্তীতে WHO কর্তৃক পোলিও নির্মূলের জন্য এই ভ্যাক্সিনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক আন্দোলনের চেষ্টা করে এবং পোলিও রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা লাখ থেকে শতকে নেমে আসে। আজ বিশ্বে পোলিও নির্মূলপ্রায় সল্কের আবিষ্কৃত পোলিও টিকার মাধ্যমে। ড. জোনাস সল্ক বিশ্ববিখ্যাত বনে যায় কিন্তু তিনি খ্যাতির বিড়ম্বনা বাদ দিয়ে ফিরে যান ল্যাবে। এই ভ্যাক্সিন বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়ার পরিবর্তে এবং সেই সময়ের প্রায় ৭বিলিয়ন ডলার ( আজকের বাজার হিসেবে ৭৫৭৫১২৭০০০০০ টাকা) সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে যেই অভাবনীয় কাজটি করলেন - বিনা মূল্যে সবার কাছে ,সব শিশুর কাছে পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে কপিরাইট কিংবা পেটেন্ট করলেন না! ভাবা যায়? তার এই ত্যাগের কারণ জিজ্ঞেস করলে সাংবাদিকদের বলেন - কেনো করবো? সূর্যের কি পেটেন্ট হয়?
Explore our highly acclaimed publication that has captured the attention of our audience. Stay informed and inspired with Talent Stationary.