Your order.
There are no items in your Cart.
চলতি বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ৪৫ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)'র পরিসংখ্যানে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এ বছর বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ডাটা রিপোর্ট কমেন্টে দিয়ে দিলাম। এছাড়া ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগে প্রতি বছর ৪০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে WHO যাই হোক, প্রশ্ন হোলো মশা কেনো এত বিপজ্জনক? সূরা বাকারার ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন -
নিশ্চয় আল্লাহ মশা কিংবা তার চেয়েও ক্ষুদ্র কোন বস্তুর উপমা দিতে সংকোচ বোধ করেন না। অতঃপর যারা ঈমান এনেছে তারা জানে যে, নিশ্চয় এটা তাদের রব-এর পক্ষ হতে সত্য। কিন্তু যারা কুফরী করেছে তারা বলে যে, আল্লাহ কি উদ্দেশ্যে এ উপমা পেশ করেছেন? এর দ্বারা অনেককেই তিনি বিভ্রান্ত করেন, আবার বহু লোককে হেদায়াত করেন। আর তিনি ফাসিকদের ছাড়া আর কাউকে এর দ্বারা বিভ্রান্ত করেন না।
.
কাফিররা প্রশ্ন করেছিলো মশা,মাকড়সা ও মাছি কি উল্লেখযোগ্য কিছু যার উদাহরণ দেয়া লাগে? তারা অবজ্ঞা এবং ভ্রান্তির ফলে সত্যদর্শন করতে পারেনি। তখন আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করে সত্যদর্শনে পুরো মানবজাতিকে হেদায়েতের সন্ধান দিলেও কিছু মানুষ সত্যদর্শনের সৌভাগ্য লাভ করতে পারেনা। তাদের ব্যাপারেই উল্লেখ আয়াতের শেষে বলেছেন - তিনি ফাসিকদের ছাড়া আর কাউকে এর দ্বারা বিভ্রান্ত করেন না। ঈমানদাররা নিশ্চিত জানে যে, এ উপমা প্রদান করা সঠিক এবং যথাযথ। তারা জানে যে, এটা আল্লাহর বাণী এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্য হিসেবে তাদের কাছে এসেছে।
Ourworldindata.org এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৬ সালে মশাবাহিত রোগের কারণে প্রায় ৭৮০০০০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ একই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে মানুষের দ্বারা প্রাণ হারিয়েছে ৫৪৬০০০ এবং সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছে ৭৫০০০ জন। অর্থাৎ এককভাবে মশার কামড়ে মৃত্যুর হার বেশি। এই মৃত্যুগুলো বিভিন্ন রোগের ফলে হয়েছে, যেমন - ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, জাপানিজ এনসেফালাইটিস, ইয়েলো ফিভার, জিকা ভাইরাস, চিকুনগুনিয়া, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস এবং লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস। যার সবকটিই মশারর মাধ্যমে ছড়ায়।
মশা নিয়ে অবাক করার মত তথ্যই বেশি। ধারাবাহিকভাবে কিছু বিষয় আলোকপাত করি। মশা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ বার পাখা ঝাপটায়, যেখানে মানুষের চোখ সেকেন্ডে ২৪ বারের বেশি কিছু হলে আর ধরতে পারে না। দৃষ্টির আগোচর হয়ে যায়। কোনো প্রাণীর শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে বের হওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইড মশা ৭৫ ফুট দূর থেকেও সনাক্ত করতে পারে। মশার দেহে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সনাক্ত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এভাবেই মশা রক্ত পান করার জন্য প্রাণী খুঁজে বের করে। মশার প্রতিটি চোখে ২৯০০০ পর্যন্ত লেন্স থাকে, যেখানে মানুষের প্রতিটি চোখে একটি করে লেন্স আছে। একারণেই মশা তার চারপাশের সবকিছু একই সাথে দেখতে পায় আর মানুষ শুধু সামনেই দেখতে পায়। মশার চোখের ডিজাইন অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক প্রচণ্ড শক্তিশালী ক্যামেরা তৈরি করেছেন। মশার যখন ডিম পারার দরকার হয় তখন সঠিক তাপমাত্রা এবং জলীয় বাস্প আছে এমন জায়গা মশা খুঁজে বের করতে পারে। মশার পেটের কাছে তাপমাত্রা এবং জলীয় বাস্প মাপার মতো অঙ্গ রয়েছে। প্রশ্ন জাগে না কীভাবে মশা জানতে পারল যে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা এবং জলীয় বাষ্পে তার ডিমগুলো সবচেয়ে ভালভাবে বেঁচে থাকতে পারবে,রহস্যময় নয়কি? এখানেই শেষ নয়, মশার ডিমগুলোর চারপাশের অবস্থা ভালো না হলে ডিম ভেঙ্গে মশার বাচ্চা বের হয় না। অনুকূল অবস্থা হলেই তবে ডিম ভেঙ্গে বাচ্চা বের হয়। ডিম পাড়ার পর সেগুলোকে একসাথে লাগিয়ে একটি ভেলার আকৃতি দেয় যার ফলে ডিমগুলো একসাথে লেগে থেকে পানিতে ভেসে থাকতে পারে, পানির স্রোতে হারিয়ে যায় না।
মশার বিপজ্জনক হবার পিছনের কারণ উদঘাটনে মশার বুদ্ধিমত্তাই ভাবনার খোরাক। ক্ষুদ্র ভেবে উপেক্ষা করার যেমন সুযোগ নেই তেমনিভাবে এর প্রভাব নিয়ে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। আমরা যেই সত্য উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছি সেই সত্য নিয়েই ভাবতে কুরআনে হেদায়েত দেয়া হয়েছে। মানুষের যখন আয়ু শেষ হয়ে যায় এবং সময় নিঃশেষ হয়ে যায় তখন মানুষ মশার মত প্রাণীতে পরিণত হয়। কারণ, মশা পেট ভরলে মরে যায়, আর যতক্ষণ ক্ষুধা থাকে বেঁচে থাকে। আমাদের বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যও কি এমন হতে পারে?
.
এবছর আমাদের দেশে জুলাই মাসেই ডেঙ্গুর আউটব্রেক হয়েছে। প্রতিবছর আমাদের স্বাস্থখাতে নিয়োজিত দায়িত্বশীলদের কপালে চিন্তার ভাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুক্তির দিশা যখন চিন্তার উর্ধ্বে তখন সত্যদর্শনের ব্যতিক্রম কি? আমাদের কি এখনো সময় হয়নি সত্যদর্শনের?
Explore our highly acclaimed publication that has captured the attention of our audience. Stay informed and inspired with Talent Stationary.