Your order.
There are no items in your Cart.
গ্রিক দার্শনিক ডায়োজিনিসকে না চিনলেও Minimal lifestyle এর সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। বর্তমান সময়ে সাড়া জাগানো ট্রেন্ডি লাইফস্টাইল। নিত্যপ্রয়োজনীয় যেকোনো দ্রব্য, ঘরবাড়ি গোছানো, আসবাবপত্র, পণ্যের নকশা, জীবনযাপনের ধরন, সবকিছুতে সাধারণ থাকার যে দর্শন একেই মিনিমালিজম বলা হয়। শিল্পে বা চিত্রকলায় মিনিমালিজমের চর্চা শুরু হয়েছিল মূলত বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে। মিনিমালিস্টিক ডিজাইনার'রা যেকোনো মাধ্যমে ব্যবহৃত অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজমের বাড়াবাড়িকে বিরক্তিকর মনে করে। শিল্পের সবকিছুতেই নানান কিছু দিয়ে বিমূর্ত এক বা একাধিক ভাবনাকে প্রকাশের চর্চাকে তাদের কাছে মনে হলো বাহুল্য। এই বিরক্তিকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য তরুণ শিল্পীরা তাদের নিজ নিজ কাজে সচেতনতার পাশাপাশি তুলনামূলকভাবে সূক্ষ্ণ কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে শুরু করে। যতটা সম্ভব কম উপাদান, কম টেকনিক ব্যবহার করে শিল্প বিনির্মাণের এ চর্চা আলোড়ন সৃষ্টি করে ১৯৭০ এর শেষ দিকে।
কিন্তু এই মিনিমালিজমের চর্চা নিয়ে কেনো এতো কথা কিংবা এই বিষয়ে আলোচনারই বা কি আছে? মিনিমালিজমের দর্শন যেই তত্ত্বের প্রবক্তা, যেই অন্তর্নিহিত ভাবধারার কথা বলে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় সেসব জানা প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরী। শিল্পের অন্তর্গত ক্ষেত্রে ব্যাপক ব্যবহার হলেও আধুনিক জীবনব্যবস্থায় এর জোয়ার শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। তবে এজন্য স্মরণ করতে হয় মিনিমালিজমের গুরু গ্রিক দার্শনিক ডায়োজিনিসকে। সে হিসেবে মিনিমালিজমের আদি উৎস আজ থেকে কমপক্ষে ২,৫০০ বছর আগে। বর্তমান প্রজন্ম মিনিমালিজমের যে উত্থানকে হাল আমলের উদ্ভাবন বলে সেলিব্রেট করছে, সেটির জন্ম মূলত গ্রিক চিন্তাবিদ ডায়োজিনিসের মস্তিষ্কে। ডায়োজিনিস সিনিসিজম বা সিনিক দর্শনের পিতা হিসেবেও সুপরিচিত। মিনিমালিজমের আদি পিতার এ দর্শনের ছোট্ট একটি নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে তার বাসস্থান। কোনো কুঁড়েঘর তো দূরেই থাক, তিনি বাস করতেন বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য যে ব্যারেল বা ড্রাম ব্যবহার করা হতো, সেরকম ফেলে দেওয়া একটি ড্রামে। যাযাবর বলতে যা বোঝায়, তিনি ঠিক তাই ছিলেন।এথেন্সের অধিবাসীরা তাকে ডাকতেন ‘কুকুর’ নামে। গ্রিক ভাষায় কুকুরের সমার্থক শব্দ হচ্ছে ‘সিনিক’। এখান থেকেই দর্শনের আরেক বিখ্যাত শাখার জন্ম- সিনিসিজম। গৃহহীন এই জীবনযাপনের ধরনই তার মাঝে মিনিমালিজমের বীজ বপন করে দেয়।
অনেকেই মনে করে মিনিমালিজম গৃহহীন থাকা, সংসার ধর্ম ত্যাগ করা, আসবাবপত্র না রাখা ইত্যাদির কথা বলে। আদৌ ব্যাপারটা তেমন নয়। মিনিমালিজমের উদ্দেশ্য আপনাকে জীবনের মূল্য সম্পর্কে দ্বিধান্বিত হতে শেখানো। অতবাহিত জীবনকে মূল্যবোধের আলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। যা করছেন, সেটি কি আপনার জন্য সত্যিই দরকারি? যেভাবে যাপন করছেন আপনার প্রতিদিনকার জীবন, তা ঠিক কতটা সঙ্গত? আপনি যেসব বস্তুর মালিক, সেসবের কতটা প্রয়োজন আছে আপনার দৈনন্দিন জীবনে? কতজন মানুষের সাথে আপনার অর্থবহ ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে ? জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে কতটা সচেতন আপনি? আপনি যা অর্জন করতে চান জীবনে, তার সাথে কি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মের মেলবন্ধন আছে, এবং থাকলে কতটা? প্রতিদিন যে কাজগুলো করেন, সেগুলোর কয়টি অর্থবহ আর কয়টি অর্থহীন? মিনিমালিস্ট হতে চাইলে এই প্রশ্নগুলোর সুস্পষ্ট জবাব থাকাটা প্রথম দায়িত্ব। আদৌ কি আমাদের কাছে এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর রয়েছে?
জীবনে মিনিমালিস্ট হবার প্রয়োজন রয়েছে কি?
Explore our highly acclaimed publication that has captured the attention of our audience. Stay informed and inspired with Talent Stationary.