Your order.
There are no items in your Cart.
ডেভিড ডানিং ও জাস্টিন ক্রুগার—দুই জন সোশ্যাল সাইকোলজিস্ট। ১৯৯৯ সালে তারা একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে কি যে করলো! আফসোস! তারা তাদের গবেষণায় দক্ষতা বনাম অদক্ষতার চিত্র গ্রাফের মাধ্যমে দেখায়, যেখানে মানুষের মাঝে বিদ্যমান কল্পনায় থাকা দক্ষতার সাথে বাস্তবিক দক্ষতার তুলনামূলক অবস্থা আলোচনা করা হয়। এই যে তুলনামূলক অবস্থার ফলে যেই ভারসাম্যহীন প্রভাব মানুষের ক্যারিয়ারে পরে সেটার কারণ কি এবং সমাধান কি সেই ব্যাপারে তারা দুর্দান্ত আলোচনা করেন। তাদের এই থিওরিকে তাদের নামেই নামকরণ করা হয়, Dunning Kruger Effect.
.
ইকোনোমিক্সের গ্রাজুয়েটসদের পাঠসূচিতে এই থিওরি স্থান পায় এই শিরোনামে Efficiency vs Inefficiency curve নামে। মূলত এই থিওরি প্রকাশ করার আগে তারা অনেকগুলো পরীক্ষা করেন এবং সবগুলো পরীক্ষা শেষে তারা একটি সাধারন প্রবণতা দেখতে পান, যা একটি সরলীকৃত গ্রাফের মাধ্যমে দেখানো হয়। তারা ব্যাখ্যা করেন,কম দক্ষ বা অদক্ষ লোকদের কল্পনাপ্রসূত বা অনুভূত যে পারফর্মেন্স তা থেকে তাদের বাস্তব ফলাফল সবসময়ই কম। কম দক্ষ বা অদক্ষ যারা আছে, তারা প্রায়সই তাদের নিজেদেরকে ও নিজেদের যোগ্যতাকে বা দক্ষতাকে অতিমূল্যায়ন করে। ডেভিড ডানিং তার Self-insight বইতে বলছেন — If you're incompetent, you can't know you're incompetent … The skills you need to produce a right answer are exactly the skills you need to recognize what the right answer is. অর্থাৎ,যখন আপনি অযোগ্য, আপনি জানেন না — আপনি আসলে অযোগ্য। আপনি যে দক্ষতা দিয়ে কোনো সঠিক উত্তরকে বের করবেন, ঠিক একই ধরনের দক্ষতা দিয়ে আপনি ঐ সঠিক উত্তরটিকে চিনতে পারবেন। আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক অনেক বেশি থাকে যখন আমরা অদক্ষ বা কম দক্ষ। এরপর যখন আরও শিখতে থাকি, তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে এবং তা কমতে কমতে সর্বনিম্ন স্থানে নেমে যায়। ঠিক এ পরিবৃত্তিতেই আমরা বিনয়ী হই। পরে ক্রমাগত শেখার ফলে আমাদের আত্মবিশ্বাস আবারও বাড়তে থাকে এবং ধীরে ধীরে আমরা সত্যিকার দক্ষ হয়ে উঠি। কিন্তু ব্যেসিক্যালি যেটা হয়, 'আমি তো হনুরে টাইপ' ভাব, দাম্ভিকতা নিয়ে জীবনের একটা বড় সময় পার হয়ে যায়! এখানেই আফসোস কাজ করে যখন বাস্তবে নিজের দক্ষতা বিচার করা হয়। ইউনিভার্সিটি গ্রাজুয়েটসদের মাঝে রেসাল্ট পরবর্তী ২ বছর এই কল্পনাবিলাস বজায় থাকে। তারা এই চাকরি করবেনা,ওই চাকরি করবেনা। নানাবিধ Preference বা পছন্দের মাধ্যমে সময় নেয় কাজে যোগদানের ক্ষেত্রে। একটা দাম্ভিক অবস্থা বিরাজ করে পুরো সময়টা জুড়ে। কিন্তু যখন সময় যায় আর চাকরির বাজারে নিজেদের কল্পনায় থাকা দক্ষতার বাস্তব চিত্র ধরা পরে তখন বিনীত অবস্থায় নেমে আসে। আর ঠিক এই জায়গা থেকেই শুরু হয় সত্যিকার দক্ষতা অর্জন,এখানে সোজা বাংলায় বললে কোনো ভাব থাকে না, দাম্ভিকতা থাকেনা। থাকে শুধু সত্যিকার ডেভেলপমেন্টের চিন্তা, দক্ষতা অর্জনের সার্বিক প্রচেষ্টা। ডেভিড ডানিং এবং ক্রুগার ইফেক্টের সমস্যায় কলুষিত অবস্থা সব ক্ষেত্রেই রয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে জেনারেল ভো এন গুয়েন গিয়াপ একাই তাঁর ছোট্ট এক বাহিনী নিয়ে জাপানি, ফরাসি, আমেরিকা ও চীনাদের পরাজিত করেছিলেন এবং ভিয়েতনাম থেকে হটিয়ে দিয়েছিলেন। কিভাবে? বড় বড় পরাশক্তিদের মাঝে বাস্তবতা বিবর্জিত দাম্ভিক দক্ষতা ছিলো যার ফলে তারা ভিয়েতনামকে পাত্তাই দেয়নি। ভিয়েতনামের জেনারেলের দক্ষতাকে ছোট করে দেখেছে জাপানি, ফরাসি, আমেরিকান ও চীনারা—তাদের নিজেদের যোগ্যতাকে অনেক বড় করে দেখেছিল এবং ধরেই নিয়েছিল ভিয়েতনাম তাদের জন্য বড় কোনো সমস্যা না। ফলাফল ভিয়েতনামের কাছে গো হারা! এ হচ্ছে ডানিং-ক্রুগার ইফেক্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আপনারা যদি আরও জানতে চান, তাহলে ডেভিড ডানিং এর Self-insight বইটি পড়ুন। ডানিং-ক্রুগার ইফেক্ট আপনাকে বুঝতেই দেবে না যে, আপনি এ মুহূর্তে অদক্ষ বা কম দক্ষ এবং আপনাকে দক্ষ হওয়ার জন্য আরও অনেক শিখতে হবে। এই অন্তরায় থেকে বের হতেই হবে,হয়তো আমরা দুই সোশ্যাল সাইকোলজিস্টদের দেখানো প্রভাবে হারিয়ে যাবো নয়তো সামনে অনেক দূর এগিয়ে যাবো, সিদ্ধান্ত নিজেদের কাছে।
Discover our selection of popular publications covering a wide range of topics in the world of Talent Stationary. Explore insightful articles and stay informed with valuable resources to spark your inspiration and creativity.